Spread the love

বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায় সম্রাট বাবরের নির্দেশে মির বাঁকি ১৫২৮-২৯ সালের মধ্যে বাবরি মসজিদ তৈরী করেন। সেই ঘটনার প্রায় ৫০০ বছর পর ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন, বাবরি মসজিদ তৈরি করতে গিয়ে বড় ধাক্কা খেলেন।
সম্প্রতি বিভিন্ন সমাজমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর ঘোষণা করেন আগামী ৬ ডিসেম্বর মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে। সমাজমাধ্যমে করা ওই পোস্টে হুমায়ুন কবীর নিজের তৃণমূল বিধায়কের পরিচয় ব্যবহার করেননি। সেখানে তিনি নিজেকে পশ্চিমবঙ্গ ইসলামিক ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়ার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।

হুমায়ুন কবীর বেলডাঙার মির্জাপুরের খাগড়ুপাড়া মোড়ের কাছে একটি ছ’বিঘা জমিতে ‘বাবরি মসজিদ’ তৈরি করার পরিকল্পনা করছেন এমন খবর পাওয়ার পরেই ওই জমির মালিক তাজিমউদ্দিন চৌধুরী বুধবার সকাল থেকে শ্রমিক লাগিয়ে টিন এবং বাঁশের বেড়া দিয়ে ওই জমি ঘিরে দেন।

এর ফলে হুমায়ুন কবীরের প্রস্তাবিত ‘বাবরি মসজি’দ কোথায় তৈরি হবে তা নিয়ে ঘোর ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। যদিও বুধবার হুমায়ুন ফের একবার দাবি করেছেন,” আগামী ৬ ডিসেম্বর বেলডাঙাতেই আমি বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করব। তবে কোন জায়গায় করব তা কাউকে বলবো না। চৌধুরীদের বাদ দিলেও বেলডাঙায় প্রচুর লোকের জমি রয়েছে।”

প্রসঙ্গত ‘বাবরি মসজিদ’ ধ্বংসের দিন ৬ ডিসেম্বর তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে ‘সংহতি দিবস’ পালন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ধর্মতলার মেয়ো রোডে ওই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ছাড়াও তৃণমূল কংগ্রেসের সমস্ত শীর্ষ নেতৃত্বের থাকার কথা রয়েছে। তবে হুমায়ুন কবীর ওই দিন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্বের অনুষ্ঠানে থাকবেন না বলেই জানা গিয়েছে।

সূত্রের খবর, আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের সংখ্যালঘু মানুষের ভাবাবেগে শান দেওয়ার জন্যই হঠাৎ করেই হুমায়ুন কবীর বেলডাঙায় ‘বাবরি মসজিদ’ নাম দিয়ে নতুন একটি মসজিদ তৈরি করার পরিকল্পনা নিয়েছেন। তবে এই কাজের আগে হুমায়ুন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কোনও অনুমোদন নেননি বলেই জানা গিয়েছে।

খাগড়ুপাড়া মোড়ে যে জমিতে হুমায়ুন কবীর এই মসজিদ তৈরি করার পরিকল্পনা করছিলেন আজ সেই জমির প্রকৃত মালিক তাজিমউদ্দিন চৌধুরী, লোকজন নিয়ে এসে টিন এবং বাঁশ দিয়ে চারপাশ ঘিরে দেন। হুমায়ুন কবীর তাঁর অনুমতি না নিয়েই ওই জমিতে ‘বাবরি মসজিদ’ তৈরি করার পরিকল্পনা করায় হুমায়ুনকে আজ এক হাত নেন তাজিমউদ্দিন চৌধুরী।

অন্যদিকে এই ঘটনার পর কিছুটা ‘ব্যাক ফুটে’ গিয়ে হুমায়ুন বুধবার বলেন,” আমি বেলডাঙায় ‘বাবরি মসজিদ’ করব বলেছি। কিন্তু ওই ব্যক্তির জমিতে মসজিদ করব সেটা কাকে কবে বলেছিলাম? আমি ওই ব্যক্তির জায়গায় ‘বাবরি মসজিদ’ করবো না। আমি বিকল্প জায়গা দেখে রেখেছি। কিন্তু সেই জায়গার নাম আমি কাউকে বলবো না।”

হুমায়ুন আজ আরও বলেন ,”আমার প্রস্তাবিত বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন আগামী ৬ ডিসেম্বর হবেই এবং সেটা বেলডাঙা-১ ব্লকেই হবে। যে ব্যক্তি আজ বড় বড় বিবৃতি দিয়েছেন তাঁর সঙ্গে আমাদের জমির দাম নিয়ে প্রাথমিক কথাবার্তা হয়েছিল। ওই ব্যক্তি রেজিনগরের বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরীর আত্মীয় হন এবং বিধায়ক পুত্র জামিল চৌধুরী সঙ্গে ব্যবসা করেন। ওই দু’জন এবং প্রশাসনের নির্দেশেই সে আজ আমার বিরুদ্ধে সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন এবং জমি ঘিরেছেন।”