বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া বসানোর জন্য রাজ্য সরকার বিএসএফ-কে (BSF) জমি দিচ্ছে না— এই অভিযোগ তুলেছিলেন অমিত শাহ (Amit Shah)। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠক শেষ হতে পারল না, বাঁকুড়ার সভা থেকে সেই অভিযোগ সরাসরি নাকচ করে বিজেপির (BJP) দিকেই পাল্টা আক্রমণ শানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কটাক্ষের সুরে বললেন, “রাজ্য যদি জমিই না দিত, তা হলে রেললাইন বা কয়লা প্রকল্পগুলো হল কীভাবে?”
মঙ্গলবার দুপুরে বাঁকুড়ার বড়জোড়া বিধানসভা এলাকায় জনসভা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুপুরে হাওড়ার ডুমুরজলা থেকে হেলিকপ্টারে রওনা হয়ে বিকেলেই কলকাতা ফিরে আসবেন তিনি। সেই সভা থেকেই শাহের নাম না করে মমতার হুঁশিয়ারি, “আমরা চাইলে আপনাকে এক পা-ও বেরোতে দিতাম না।”
মঙ্গলবার কলকাতায় সাংবাদিক বৈঠক করে শাহ বলেছিলেন, “বাংলার সীমান্ত দিয়ে যে অনুপ্রবেশ হচ্ছে, তা শুধু বাংলার বিষয় নয়। পুরো দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রশ্ন। এমন মজবুত সরকার এখানে আনুন, যারা এখানে অনুপ্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ করে দেবে।”
তার পরিপ্রেক্ষিতেই শাহকে অনুপ্রবেশ নিয়ে পাল্টা তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী। বাঁকুড়ার ওই সভা থেকে তিনি বলেন, “শুধু বাংলাতেই অনুপ্রবেশ হয়? কাশ্মীরে হয় না?” তার পরেই পহেলগামে জঙ্গি হামলার প্রসঙ্গ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “পহেলগামে কী ঘটেছিল, সেখানে আপনারা কী করছিলেন?”
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহার করে এসআইআর প্রক্রিয়ায় প্রায় ৫৪ লক্ষ মানুষের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে— এই অভিযোগও তুললেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, নির্বাচন কমিশনের দফতরের মধ্যেই বিজেপির আইটি সেলের কর্মীরা বসে কাজ করছে। শুধু নামের ইংরেজি বানানে সামান্য অমিল থাকলেই ভোটার তালিকা থেকে নাম কেটে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এদিন রাজ্য সফরে এসে ‘স্বপ্নের বাংলা’ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন শাহ। সেই বক্তব্যের পাল্টা দিতে গিয়ে নাম না করে বিজেপিকে তীব্র কটাক্ষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “ভোট এলেই ওরা সোনার বাংলা গড়ার কথা বলে। কিন্তু সোনার বাংলা নয়, ওরা ধ্বংসের বাংলা গড়তে চায়।”
এই প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী আরও অভিযোগ, বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষীদের উপর নানা ভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে। বাংলায় কথা বললেই পরিযায়ী শ্রমিকদের ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে হেনস্থা করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, এ ধরনের আচরণ শুধু বাংলার মানুষের প্রতি অবমাননাই নয়, দেশের সংবিধান ও বহুত্ববাদী চরিত্রেরও পরিপন্থী।