বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: দিল্লিতে নির্বাচন সদনের সামনে তৃণমূলের ধর্না নিয়ে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি। এদিন তৃণমূলের দশ সদস্যের প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করে। তারপর তারা কমিশনের অফিসের বাইরে ধর্নায় বসার সিদ্ধান্তের কথা জানান। এরপরেই পদক্ষেপ করে দিল্লি পুলিশ।
তৃণমূলের সাংসদ ও প্রাক্তন সাংসদের টেনে হিঁচড়ে সরিয়ে মন্দির মার্গ থানায় নিয়ে যায় দিল্লি পুলিশ। দোলা সেন, শান্তনু সেনদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় তারা মোদী-অমিত শাহ হায় হায় স্লোগান দেন।
গত সোমবারের মতো এদিনও নির্বাচন কমিশনে গিয়েছিল তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। বিকেল সাড়ে চারটেয় তাদের সময় দেওয়া হয়েছিল কমিশনের তরফে। সেদিনের মতো এদিনও তৃণমূলের দাবি ছিল ভোটের ফলাফল ঘোষণার সময় পর্যন্ত কেন্দ্রীয় এজেন্সির তৎপরতা বন্ধ রাখতে হবে এবং বিরোধী দলগুলির জন্য লড়াইয়ের ময়দান সমান রাখতে হবে। পাশাপাশি কমিশনকে নিরপেক্ষ হলেই চলবে না, তারা যে নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে, তা সাধারণের বোধগম্য করতে হবে বলে দাবি করেছিল তৃণমূল।
এদিন তৃণমূলের প্রতিনিধিদলের তরফে নির্বাচন কমিশনের কাছে এনআইএ, ইডি, সিবিআই এবং আয়কর দফতরের প্রধানদের সরানোর দাবি করা হয়। দাবির সমর্থনে তারা নির্বাচন কমিশনের দফতরের সামনে ২৪ ঘন্টা শান্তিপূর্ণ অবস্থানের সিদ্ধান্ত নেন।
তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন বলেন, ২০২২ সালের একটি মামলায় ২০২৪-এ এনআইএ গ্রেফতার করেছে। আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়, তাই এব্যাপারে স্থানীয় পুলিশকে জানানো উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি। যদিও এনআইএ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, তারা তল্লাশির ব্যাপারে ভূপতিনগর থানাকে আগেই জানিয়েছিলেন।
তৃণমূল সাংসদ সাগরিকা ঘোষ বলেন, সিবিআই, এনআইএ, ইডি ও আয়করের আধিকারিকরা যেভাবে কাজ করছেন, তাতে তাঁদেরকে বিজেপির শাখা সদস্য বলে মনে হচ্ছে। রাজ্যে বিজেপির এক নেতা এনআইএ আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন বলেও দাবি করেন তিনি।
তৃণমূলের প্রতিনিধিদলের এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরেই উত্তেজনা ছড়ায় একাধিক বাস নিয়ে হাজির হয় দিল্লি পুলিশ। তৃণমূলের নেতানেত্রীদের জানিয়ে দেওয়া হয়, নির্বাচন কমিশনে দেখা করার অনুমতি ছিল। কিন্তু সেখানে ধর্না দেওয়ার কোনও অনুমতিই তাদের নেই। এছাড়াও নির্বাচন কমিশনের আদর্শ আচরণবিধি লাগু রয়েছে। তারপরেই প্ল্যাকার্ড হাতে অনড় থাকেন তৃণমূলের সাংসদ ও সদস্যরা। তারপরেই দিল্লি পুলিশ সেখান থেকে তৃণমূলের ধর্না তুলে বাসে করে নিয়ে যায় মন্দির মার্গ থানায়।
এদিন নির্বাচন কমিশনে তৃণমূলের তরফে গিয়েছিলেন দশ জন। তাঁদের মধ্যে দুই প্রাক্তন সাংসদ শান্তনু সেন, অর্পিতা ঘোষ এবং সাংসদ দোলা সেন সকালে দিল্লি যাওয়ার আগে অভিযোগ করেন, ভোটের আগে এজেন্সিকে অপব্যবহার করে ভয় দেখা চাইছে বিজেপি। দিল্লিতে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন, সাংসদ নাদিমুল হক, সাংসদ সাকেত গোখলে, সাংসদ সাগরিকা ঘোষ, বিধায়ক বিবেক গুপ্তা, প্রাক্তন সাংসদ আবির বিশ্বাস। এছাড়াও ছিলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুদীপ রাহা।