বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক:যৌন নির্যাতনের অভিযোগে দুই শাগরেদকে গ্রেফতারের পরেও তৃণমূল কিংবা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেখ শাহজাহানের মধ্যে কোনও দোষ দেখতে পাচ্ছেন না। এমনটাই বলছেন সন্দেশখালির ভুক্তভোগীরা। অন্যদিকে শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করার দায় রাজ্য পুলিশের ডিজি কার্যত ইডির ঘাড়েই চাপিয়েছেন। যে কারণে বিভিন্ন দিক থেকে সমালোচনার মুখে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল সরকার।
যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী নেত্রী থাকার সময় শান্তিপুরের মূক ও বধিরকে ধর্ষণের দায় কিংবা সিঙ্গুরের তাপসী মালিককে নির্যাতনের দায় তৎকালীন শাসকদলের ওপরে দিয়ে আন্দোলন করেছিলেন, সেই নেত্রী নির্যাতিতদের সঙ্গে দেখা করতে সন্দেশখালিতে যাওয়ার সময় পাচ্ছেন না। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ সেখানকার ভুক্তভোগীরা।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক ভুক্তভোগী মহিলা বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে কী আর বলবেন, তিনি খোঁজ নেননি। ভুক্তভোগীদের সঙ্গে দেখা করেননি। তিনি একজন মহিলা আর তাঁরাও মহিলা। এই পরিস্থিতিতে যদি তিনি ভুক্তভোগীদের কাছে না যান, তাহলে তাঁদের অবস্থা কী হতে পারে!
সন্দেশখালির আরেক মহিলা সংবাদ মাধ্যমের সামনে বলেছেন, উত্তম সর্দার ও শিবু হাজরার এখন কোনও শাস্তি হয়নি বলে গ্রামে বাস করা ঝুঁকির। তিনি শেখ শাহজাহানের সঙ্গে এই দুই নেতারও শাস্তির দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, গ্রামের মহিলারা মর্যাদার সঙ্গে বাঁচতে চান। একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মহিলাদের কষ্ট বুঝতে পারছেন না। গ্রামের মহিলারা ভেবেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী একবার অন্তত কথা বলতে আসবেন, তাঁদের পক্ষে কথা বলবেন।
প্রসঙ্গত গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের খোঁজে যাওয়া ইডির আধিকারিকদের ওপরে ব্যাপক হামলা হয়। তারপর থেকে শেখ শাহজাহান অন্তরালে যেতেই সামনে আসনে শুরু করেন গ্রামবাসীরা, বিশেষ করে গ্রামের মহিলারা। তাঁরাই শেখ শাহজাহান-সহ উত্তম সর্দার ও শিবু হাজরাদের বিরুদ্ধে জমি দখল থেকে শুরু করে যৌন নির্যাতন-সহ নানা অভিযোগ তোলেন।
সোমবার জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা উত্তর চব্বিশ পরগনার সন্দেশখালি পরিদর্শন করেন। তিনি ভুক্তভোগী মহিলাদের সঙ্গে দেখা করার পরে জানিয়েছেন, মহিলারা সেখানে ভীত। তাঁর সামনে মহিলারা কেঁদেছেন। তিনি রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি করেছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, তাঁর কাছে দুটি ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানি-সহ ১৮ টি অভিযোগ পেয়েছেন। তিনি সন্দেশখালি থেকে ফিরে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গেও দেখা করেন।
এদিকে কলকাতা হাইকোর্টে এদিন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে সন্দেশখালি যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। তাঁকে নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি শর্ত হিসেবে বলেছে, তাঁকে নিশ্চিত করতে হবে আইনশৃঙ্খলার অবনতি যাতে না হয়। সন্দেশখালির নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে তার ফল রাজ্য সরকারকে ভুগতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন বিচারপতি।