বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলীয় অঞ্চলজুড়ে এখন সর্বত্র একটাই আতঙ্ক—ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’। ক্রমেই শক্তি সঞ্চয় করে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে এই ঘূর্ণিঝড়, এবং আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাতে এটি তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে।
ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর, শঙ্করপুরসহ সমগ্র উপকূল অঞ্চলে। দিঘার সমুদ্র এখন একেবারে উত্তাল—প্রচণ্ড ঢেউ তটে এসে আছড়ে পড়ছে বারবার। বৃষ্টির সঙ্গে চলছে প্রবল দমকা হাওয়া, যা ধীরে ধীরে ঝড়ের রূপ নিচ্ছে।
পর্যটকপ্রিয় দিঘা শহরে পর্যটকদের নিরাপত্তায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জারি করা হয়েছে কঠোর নির্দেশিকা। সৈকতে নামা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, এবং মাইকিং করে বারবার সতর্ক করা হচ্ছে পর্যটকদের। অনেক পর্যটক ইতিমধ্যেই হোটেল ছেড়ে নিরাপদ স্থানে সরে গিয়েছেন।
এদিকে, উপকূলবর্তী গ্রামগুলিতে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নৌকা ও ট্রলারগুলিকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে তীরে। স্থানীয় প্রশাসন, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর, সিভিল ডিফেন্স ও পুলিশ — সকলে এখন ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত।
দিঘা, কাঁথি, রামনগর, খেজুরি, নন্দকুমার, তমলুক—সব জায়গাতেই জারি হয়েছে সতর্কতা। নিম্নাঞ্চল থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে জোরকদমে। আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে একাধিক জায়গায়।
আবহাওয়াবিদদের মতে, ‘মন্থা’ স্থলভাগে আছড়ে পড়ার পর তার প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি ও কলকাতাতেও দেখা দিতে পারে বৃষ্টির তীব্রতা ও ঝড়ো হাওয়া।
একদিকে প্রশাসনের প্রস্তুতি, অন্যদিকে মানুষের মনে বাড়ছে উৎকণ্ঠা—
উপকূলজুড়ে এখন একটাই প্রশ্ন, কতটা তাণ্ডব দেখাবে ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’?