বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: সেই দিন যে নেই তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বুঝতে পারছেন। রাজ্যের মুসলিম ভোটাররা এবছর আর চোখ বুজে তৃণমূলকে ভোট দেবে না। ভোটের নয়া রসায়ন নিয়ে কি চিন্তিন মুখ্যমন্ত্রী? সারা দেশে যে কটি রাজ্য রয়েছে তার মধ্যে কাশ্মীর ও অসমের পরেই মুসলিম জনসংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। বর্তমান তথ্য অনুসারে, এ রাজ্যের প্রায় ৩০ শতাংশ ভোটদাতা মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত। রাজ্যের অন্তত তিনটি এমন জেলা রয়েছে যেগুলি মুসলিম অধ্যুষিত জেলা (মালদা, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর)। এছাড়াও এমন ৭টি জেলা রয়েছে যেখানে মুসলিম ভোটদাতা রয়েছেন ২৫ শতাংশের বেশি। ফলে সব মিলিয়ে এই বিপুল সংখ্যক ভোটব্যাঙ্ক কার্যত নির্ণায়ক হয়ে দাঁড়ায়। এই অংকের হিসাবটা খুবই ভালো জানের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত প্রায় দেড় দশক ধরে রাজ্য শাসন করছে তৃণমূল। দীর্ঘকাল কোনও দল ক্ষমতায় থাকলে স্বাভাবিক ভাবেই সরকার বিরোধিতার সুযোগ তৈরি হয়। তৃণমূলও তার ব্যতিক্রম নয়। রাজ্যে ঘটা একাধিক ঘটনা তৃণমূলের ভাবমূর্তি ১০০ শতাংশ স্বচ্ছ রাখেনি। কিন্তু তার প্রতিফলন মুসলিম ভোটে ২০২১ সালে দেখা যায়নি। তবে ২০২৬-এর আগে রাজ্যে মুসলিম ভোট নিয়ে চলতে পারে দড়ি টানাটানি। ২২ ডিসেম্বর মুর্শিদাবাদ থেকে নিজের নতুন দলের নাম ঘোষণা করেছেন তৃণমূলের বহিষ্কৃত বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। হুমায়ুনের জনপ্রিয়তার পিছনে রয়েছে বাবরি মসজিদ। চলতি মাসের শুরুতেই এই মসজিদের শিলান্যাস করেছেন হুমায়ুন। তার সেই অনুষ্ঠান ও পরে দল ঘোষণার সভায় কাতারে কাতারে লোকের উপস্থিতি চোখে পড়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, মুর্শিদাবাদের মুসলিম ভোট কি ‘জনতা উন্নয়ন পার্টি’ নিজের দখলে রাখতে চলেছে? কারণ ইতিমধ্যেই ২৯৪টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ১৩৫টিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ঘোষণা করেছেন হুমায়ুন।এমনকি হুমায়ুন কবীর আসাউদ্দিন ওয়েইসির এআইএমআইএম-এর সঙ্গে জোটে যেতে পারেন বলেও জল্পনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে গ্রামের মুসলিম ভোটারদের নিজের দখলে রাখতে পারেন হুমায়ুন। আবার শহুরে ভোটারদের নিজেদের দিকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করবে এআইএমআইএম। এছাড়াও সঙ্গে থাকতে পারে ISF। সব মিলিয়ে যথেষ্ট চিন্তায় যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় – তা বলার অপেক্ষা রাখে না।