বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: গেরুয়া-লাল ভাই ভাই! সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও নিয়ে এমনটাই মন্তব্য করেছিল সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস। বিষয়টি তারা নিজেদের এক্স হ্যান্ডে পোস্টও করে। আর এদিন তৃণমূলকে জবাব দিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছে সিপিআইএম রাজ্য নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত তৃণমূল কংগ্রেস ভিডিওটির উল্লেখ করে তাদের এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছিল, গেরুয়া-লাল ভাই ভাই! বাংলায় স্বাগতম যেখানে জাফরান এবং লাল আলাদা আলাদা! রাজ্য বিজেপি ও সিপিআইএমকে ট্যাগ করে তারা লিখেছিল অপবিত্র জোট। শাসকদল আরও বলেছিল সিপি(আই) এম সমর্থকদের বাংলা-বিরোধীর পাশাপাশি একসঙ্গে মিছিল করতে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে।
তৃণমূলের তরফে আরও বলা হয়, বাংলার জনগণকে তারা নিশ্চিত করছে, যে তারাই একমাত্র দল যারা বাংলার অধিকারের পক্ষে দাঁড়িয়েছে এমন সময়ে যখন রাজ্যের সিপি(আই)এম নেতারা বিজেপির জমিদারদের কাছে তাদের আত্মা বিক্রি করেছেন।
এর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সিপিআইএমের তরফে মিথ্যা, অভিশাপ এবং টিএমসি শিরোনামে বলা হয়েছে, বাংলায় রাজনীতি করার আগে, টিএমসিকে বাংলার রাজনীতির ইতিহাস জানা উচিত। বিজেপির এই মিছিলে লাল পতাকার উপস্থিতি দেখিয়ে গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করেছিল টিএমসি।
সিপিআইএমের তরফে বলা হয়েছে, তৃণমূলের তথ্যের জন্য তারা বলছে, এই লাল পতাকাগুলি বিপ্লবী মার্কসবাদীদের কমিউনিস্ট পার্টির। ১৯৯৬ সালে, দলটি তার রাজনৈতিক লক্ষ্যের জন্য সিপিআইএম থেকে আলাদা হয়ে যায়। তৎকালীন সময়ে অবিভক্ত দার্জিলিংকে নিয়ে গোর্খাল্যান্ড ঘোষণার দাবি ওঠে। সেই পরিস্থিতিতে সিপিআরএম নিজেকে একটি পৃথক দল হিসাবে ঘোষণা করেছিল, কারণ তারা গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (জিএনএলএফ) এর সঙ্গে স্বাক্ষরিত বামফ্রন্ট সরকারের শান্তি মীমাংসা নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিল।
নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে জানাতে গিয়ে সিপিআইএম বলেছে, বর্তমানে তাদের সঙ্গে সিপিআরএমের কোনও সম্পর্ক নেই। তাদের অভিযোগ, বিজেপি বাংলায় বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে এবং টিএমসি এই ধরনের মিথ্যা প্রচার করছে।
সিপিআইএমের প্রশ্ন আসলে বাংলায় বিজেপির বন্ধু কারা? রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজ্যে বিজেপির প্রভাব বাড়ছে। অন্যদিকে, দুর্নীতি ও তোলাবাজির হাজার হাজার অভিযোগ সত্ত্বেও, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার তৃণমূলের বিরুদ্ধে কিছু করছে না।
রাজ্যে তৃণমূল ও বিজেপির সম্পর্কের ইতিহাস সম্পর্কে বলতে গিয়ে সিপিআইএমের তরপে বলা হয়েছে, টিএমসি ও বিজেপির একসঙ্গে বেশ কয়েকবার নির্বাচনে লড়াই করেছে। তৃণমূল সুপ্রিমো নিজেই স্বীকার করেছিলেন, বিজেপি তাদের প্রাকৃতিক মিত্র। অন্যদিকে আরএসএস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে “আরএসএসের দুর্গা” বলে প্রশংসা করেছে।
ফলে তৃণমূলের এই ধরনের মিথ্যা প্রচার নির্বাচনের নিয়ম অনুসারে অনৈতিক। সেই কারণে হুঁশিয়ারি দিয়ে সিপিআইএম বলেছে, অবিলম্বে তৃণমূলের এক্স হ্যান্ডেল থেকে এই তথ্যটি অপসারণের দাবি করা হচ্ছে। না করলে সিপিআইএম নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি অনুযায়ী এর বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।