বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: শুক্রবার থেকে সোমবার পর্যন্ত তাপপ্রবাহে সতর্কতা জারি হয়েছে কলকাতায়। প্রচণ্ড গরমে নাজেহাল দশা রাজ্যবাসীর। দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় লু বইছে। শুক্রবার থেকে কলকাতাতেও একাধিক জায়গায় লু বইতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
বেলা ৯টা বাজতে না বাজতেই রোদের তাপে পুড়ছে শরীর। তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি হলেও গরম মনে হচ্ছে ৪৪ ডিগ্রির মতো। এতোটাই উত্তাপ গায়ে লাগছে। এমনিতেই সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪ পর্যন্ত রোদে বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে। গতকাল নবান্ন জরুরি বৈঠক করেছে এই নিয়ে। কিন্তু তাতে কি পুরোটা বিপদমুক্ত থাকা যাবে।
কারণ আজ থেকে যে পরিমাণে তাপপ্রবাহ শুরু হবে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জায়গায় তাতে রোদে না বেরোলেও গরমে হিটস্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়বে। এবং সেটা সব বয়সের মানুেষর মধ্যেই হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রার মধ্যে খুব একটা ফারাক থাকবে না। আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি পর্যন্ত বাড়তে পারে তাপমাত্রা।
সাধারণত ৪০ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রা পৌঁছে গেলেই তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হয়। আর তাপমাত্রা যদি ৪৫ ডিগ্রির উপরে চলে যায় তাহলে সেটা অতিরিক্ত তাপপ্রবাহ বলে ধরা হয়। এমনকী অনেক সময় তীব্র তাপপ্রবাহে তাপমাত্রা ৪৭ ডিগ্রি পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে। আর এই তাপপ্রবাহে রোদে বেরোলেই যে হিটস্ট্রোকের সম্ভাবনা তৈরি হয় তা নয়। ঘরে থাকলেও হতে পারে হিটস্ট্রোক।
বিশেষ করে শিশু এবং প্রবীণদের এই তাপপ্রবাহের হিটস্ট্রোকের সম্ভাবনা বেশি থাকে। যদিও ২২ তারিখ থেকে রাজ্যের সব স্কুলে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই সময় যাঁরা অতিরিক্ত ঘামেন তাঁদেরও হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। কারণ অতিরিক্ত ঘামে শরীরের সব জল বেরিয়ে যায়। তখন শরীরে ডিহাইড্রেট হয়ে যায়। এই সময় তাঁরা পর্যাপ্ত পরিমাণে জল গ্লুকোজ এবং শরীর ঠান্ডা না রাখলে হিটস্ট্রোকের প্রবল সম্ভাবনা তৈরি হয়।
তাপপ্রবাহের সময় হিটস্ট্রোকের পাশাপাশি একাধিক সমস্যা তৈরি হতে পারে। যেমন হিট ক্র্যাম্পও হতে পারে। এতে হঠাৎ করেই শরীরের পেশীতে টান লাগে। হাত পা কাঁপতে শুরু করে। তার সঙ্গে প্রচণ্ড ঘাম এবং জ্বর হয়। এরকম লক্ষ্মণ শরীরে দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা জল বেশি করে খেতে হবে। তার সঙ্গে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা জায়গায় থাকতে হবে। এবং যে পেশীতে টান লেগেছে সেই পেশীতে ম্যাসাজ করতে হবে।
আর হিটস্ট্রোক সাধারণ ৫৫ বছরের বেশি এবং ১০ থেকে ১৫ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে দেখা যায়। হিটস্ট্রোকের বেশ কিছু লক্ষ্মণ রয়েছে। যেমন হঠাৎ করে অবসন্ন হয়ে পরেন রোগী। শরীর একেবারে ছেড়ে দেয়। শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ করে অনেকটাই বেড়ে যায়। এরকম লক্ষ্মণ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া জরুরি।