
বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক : রবীন্দ্রনাথের স্যাকরা কবিতাটি মনে আছে? রবি কবি লিখেছিলেন কার লাগি এই গয়না গড়াও যতন ভরে। স্যাকরা বলে, একাজ আমার প্রিয়ার তরে, শুধাই তারে , প্রিয়া তোমার কোথায় আছে? স্যাকরা বলে, মনের ভিতর বুকের কাছে।
বাংলার অলঙ্কার ও অলঙ্কার শিল্পীরা যাঁরা কারিগর নামে বেশি পরিচিত তাঁদের বসবার মূলত হাওড়া জেলার ডোমজুড়ে। একটা সময়ে মার্টিন ট্রেনের দৌলতে হাওড়া দাস নগর, ডোমজুড়, আমতার সঙ্গে যোগসূত্র গড়ে ওঠে। ডোমজুড়ে গয়না শিল্পের কারিগরেরা কবে থেকে গয়না নির্মাণের কাজ শুরু করেন তার হিসেব না থাকলেও হাতের কাজের কারিগর হিসেবে খ্যাতি কুড়িয়েছেন বিশ্বজুড়ে।ভারতের নানা প্রান্তে এই ভূমিপুত্র বঙ্গ সন্তানেরা গয়না শিল্পের কারিগর হিসেবে ছড়িয়ে আছেন।

মানুষ একদিন বিবর্তনের ধারায় বুঝেছিল পরিধান বস্ত্রের সঙ্গে মানানসই গয়না দেহসৌষ্ঠবকে আকর্ষণীয় করে তুলতে গয়নার প্রয়োজনীয়তা আছে। মানুষ যখন পূর্ণ মানব হয়ে ওঠেনি, তখন থেকেই নিয়ান্ডারথাল শ্রেণীর প্রায় মানুষ নির্মাণ করেন গয়না। স্পেনের দক্ষিণ পূর্ব উপকূলের গুহাতে প্রায় এক লক্ষ পনেরো হাজার বছর আগেই হাড় কাঠ, ঝিনুক ও পাথরের গয়নার নিদর্শন মিলেছে। পরবর্তী সময়ে রাজারাজরার হাত ধরে গয়না শিল্পের বিকাশ ঘটে। আজ সোনার দাম যেহারে হু হু করে বাড়ছে তখন মানুষ হালকা গয়নার দিকে ঝুঁকেছেন। কিন্তু হাতে তৈরি গয়না নির্মাণে আগেভাগে সেই নকশা অনুযায়ী কতটা সোনা লাগবে আগাম বলা কষ্টকর।ফলে গ্রাহকরা নিশ্চিত হতে পারেন না কত মূল্য তাঁদের দিতে হবে মনের মত গয়নার জন্য। বিজ্ঞানের সুত্র ধরে এখন কম্পিউটার কাজটা সহজ করে দিয়েছে। দরকার শুধু গয়নার কারিগরদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ।

নব্বইয়ের দশক থেকে পূর্ব ভারতে প্রথম পুনিত কুমার শ্রীমল অলঙ্কার শিল্প ও সংশ্লিষ্ট শিল্পের এক বিজ্ঞানসম্মত শিক্ষাক্রম পরিচালনা করে আসছেন সিঞ্জেম সংস্থায়। সংস্থার এডুকেশনাল ডিরেক্টর বিনীতা শ্রীমল। বিনীতা শ্রীমল জানালেন নববর্ষের শুভদিনে আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানে ক্যাড শিক্ষাক্রম শুরু করছি। মাস্টারস্ ডিগ্রি ও সার্টিফিকেট কোর্স থাকছে। ডোমজুড়ের কারিগরদের বিশেষ ছাড় দিয়ে শেখার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এদিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিখ্যাত মডেল মাধবীলতা মিস্ ফেমিনা ও মিস্ ইণ্ডিয়া খ্যাত মডেল সুস্মিতা রায়।