বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক:এখানে সব ওপর থেকে নিচু পর্যন্ত চোর। চোরেদের বিশ্বাস করে কেউ টাকা দেয় হাতে? কেন্দ্রীয় বকেয়া নিয়ে এদিন ইকো পার্কে এমনটাই মন্তব্য করলেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। সন্দেশখালি প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ওই জায়গাটা কোনও দিনই নিয়ন্ত্রণের মধ্যে ছিল না।
এখন প্রশাসনের আধিকারিক ও তৃণমূলের নেতারা যাওয়া প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, বছরের পর বছর ধরে সেখানে মহিলারা অত্যাচারিত হয়েছে, কিন্তু কেউ কি খোঁজ নিয়েছেন? ওখানে আইনকানুন ছিল না বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। তবে আজ যখন মানুষের ঠিক দেওয়ালে ঠেকেছে, তখনই মানুষ রাস্তায় নেমেছে বলেও দাবি করেছেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি।
দিলীপ ঘোষ বলেছেন, যাঁরা এখন সন্দেশখালির নাম শুনছেন, তাঁরা ভাবছেন নতুন কিছু হয়ে গেল। আর সন্দেশখালির মতো এমন অনেক জায়গা রয়েছে, যেখানে এখন এই পরিস্থিতি চলছে বলেও দাবি করেছেন দিলীপ ঘোষ। যা শুরু হয়েছে সন্দেশখালিতে, তাতে অনেক জায়গা খালি হয়ে যাবে। তৃণমূল ২২ টা আসন দখলে রাখতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি। তৃণমূলকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন, ঘর সামলান! কেউ বলছেন, ১৯, কেউ ১৫। এবার তৃণমূলের আসন একডজন কমে যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
সন্দেশখালি কি আরেকটা নন্দীগ্রাম হতে চলেছে, এব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে দিলীপ ঘোষ বলেন, নন্দীগ্রাম একটা গেম চেঞ্জার ছিল। তবে সন্দেশখালি থেকে মানুষ প্রেরণা নেবেন, যাঁরা অত্যাচারিত তাঁরা প্রতিবাদ করবেন। নন্দীগ্রামের মতো পরিস্থিতি আরও অনেক জায়গায় তৈরি হবে, বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ।
প্রসঙ্গত এদিন দিল্লি যাওয়ার আগে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, সন্দেশখালি দ্বিতীয় নন্দীগ্রাম হতে চলেছে। সেখানে বশ্যতার বিরোধী সংগ্রাম চলছে। নন্দীগ্রাম শুরু হয়েছিল জমি অধিগ্রহণ দিয়ে। সন্দেশখালি শুরু হয়েছে মেয়েদের ওপর অত্যাচার দিয়ে। তার সঙ্গে রয়েছে জমি দখল।
শেখ শাহজাহান সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, সারা রাজ্য জুড়েই পাচারকারীরা তৃণমূলে নেতা। তারা দলকে পয়সা দেয় আর ভোটের সময় ভোট করিয়ে দেয়। তৃণমূল এদের ওপরে দাঁড়িয়ে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার এডিজি সুপ্রতিম সরকারকে নিয়ে ডিজি রাজীব কুমারের যাওয়া প্রসঙ্গকে কটাক্ষ করে দিলীপ ঘোষ কটাক্ষ করে বলেছেন, শেখ শাহজাহানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। উনি (রাজীব কুমার) কীভাবে ইডি-সিবিআইয়ের থেকে নিজেকে আড়াল করেছিলেন, তাই বলতে গিয়েছিলেন।
সন্দেশখালি নিয়ে সুরাহা যাঁদের করার কথা, তাঁরাই তা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। পুলিশ যে সুরাহা করতে পারত না করেনি। পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখেছে কিংবা অত্যাচারীদের সহযোগিতা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি।
দিলীপ ঘোষের প্রশ্ন আন্দোলনও কি করতে দেবেন না? যদি দোষীকে আড়াল করেন, গ্রেফতার না করেন, তাহলে তো এই পরিস্থিতি তৈরি হবে। কেন সাধারণ মানুষ পুলিশের গাড়ি আটকাচ্ছে? কারণ পুলিশ প্রশাসনের ওপরে আস্থা চলে গিয়েছে সাধারণ মানুষের। সেই আস্থা ফিরিয়ে আনতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই উদ্যোগ নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
দিলীপ ঘোষ বলেন, আন্দোলনকে ছোট করে দেখাবেন, মহিলাদের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন, তাহলে মানুষের ক্ষোভ কী করে কমবে, প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। কেন্দ্রের বকেয়া না দেওয়া প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, ছোট কাউকে টাকা দেওয়া হলে হিসেব নেন বাড়ির লোকেরা। এখানেও সেই পরিস্থিতি। অন্য রাজ্যের বকেয়া নিয়ে কোনও অসুবিধা নেই বলেও দাবি করেছেন দিলীপ ঘোষ।