বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক:: কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল বড় আকার নিচ্ছে। প্রকাশ্যে সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে বিষোদ্গার করছেন তাপস রায় থেকে কুণাল ঘোষের মতো নেতারা।
গতকাল সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কুণাল বলেন, কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রে এবার মহিলা প্রার্থী করা হলে ভালো হয়। সেক্ষেত্রে শশী পাঁজার নামই তিনি ভাসিয়ে দিলেন।
কুণাল ঘোষ গতকাল থেকেই সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আক্রমণ শানিয়ে চলেছেন। আজও বলেন, সুদীপ রোজভ্যালির দালাল। রোজভ্যালির টাকায় বিদেশ গিয়েছেন বলে দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। রোজভ্যালি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে সিবিআই, সুদীপ গিয়েছেন নরেন্দ্র মোদীর কাছে। তাঁর জামিন তাই স্থায়ী!
গতকাল কুণাল সকালে এক্স হ্যান্ডলে দাবি করেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার হয় সুদীপকে গ্রেফতার করুক। তিনি ভুবনেশ্বরে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি থাকার জন্য বিল কে বা কারা মিটিয়েছে তা খতিয়ে দেখুক ইডি। এর সঙ্গে কয়লা কেলেঙ্কারির যোগ থাকতে পারে।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কিছু না করলে তিনি এ বিষয়ে তদন্ত চেয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন বলেও জানিয়েছেন কুণাল। যদিও এদিন উত্তর কলকাতার ৭টি ওয়ার্ডের কর্মীদের নিয়ে কুণালকে ব্রিগেডে জনগর্জন সভা সংক্রান্ত মিছিলে পা মেলাতে দেখা গিয়েছে। যা শক্তি প্রদর্শন বলেই মনে করছে রজনৈতিক মহল।
কুণাল অবশ্য সকালের টুইট নিয়ে বিকেলে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি। তাপস রায়ের বক্তব্য প্রসঙ্গেও সেভাবে প্রতিক্রিয়া দেননি। বরানগরের বিধায়ক তাপস রায় দাবি করেছেন, তাঁর বাড়িতে ইডি পাঠানোর পিছনে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন। এমন আশঙ্কা ইডি হানার আগে তাপস তাঁকে জানিয়েছিলেন বলে দাবি কুণালের।
কুণাল ঘোষ বলেন, প্রার্থী ঘোষণার আগে যে কেউ নিজের মতামত জানাতেই পারেন। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যাঁকে প্রার্থী করবেন তাঁর জন্য দলের সকলেরই ঝাঁপিয়ে পড়া উচিত বলে মন্তব্য কুণালের। তিনি এদিনও সুদীপের বিজেপি-ঘনিষ্ঠতা নিয়ে সরব হয়েছেন।
কলকাতা উত্তর কেন্দ্র থেকে ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৯ সালে সাংসদ হয়েছেন সুদীপ। আগে এই আসনটির নাম ছিল কলকাতা উত্তর-পূর্ব। মেঘনাদ সাহা, মোহিত মিত্র, হীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, প্রতাপ চন্দ্র চন্দ্র, সুনীল মৈত্র, অজিত কুমার পাঁজা ও মহম্মদ সেলিম সাংসদ হয়েছিলেন।
কুণাল এদিন বলেন, দক্ষিণ কলকাতা মহিলা সাংসদ পেয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেকর্ড গড়েছেন। এখন মালা রায় সাংসদ। যেহেতু উত্তর কলকাতা কখনও মহিলা সাংসদ পায়নি, তাই এবার সেখানে মহিলা প্রার্থীর বিষয়ে দল বিবেচনা করুক। অজিত কুমার পাঁজার পুত্রবধূ শশী পাঁজাকে প্রার্থী করা যেতে পারে।
১৯৮৪, ১৯৮৯, ১৯৯১, ১৯৯৬, ১৯৯৮ ও ১৯৯৯ সালে লোকসভা ভোটে জিতেছিলেন অজিত কুমার পাঁজা। কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে। তাঁর পুত্রবধূকে প্রার্থী করা হলে অজিত কুমার পাঁজা সংক্রান্ত আবেগও ইতিবাচক ফল দিতে পারে বলে দাবি কুণালের।
তখনই প্রশ্ন করা হয়, শশী পাঁজা হলে কেন নন নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়। নয়না সুদীপের স্ত্রী। কুণাল তখন বলেন, শশী পাঁজা মন্ত্রী হিসেবে ভালো কাজ করছেন। নয়না যদি বিউটি পার্লারে কাটানোর পর সময় দিতে পারেন তাহলে ভালো। সত্তরোর্ধ্ব সুদীপ এই বয়সেও উত্তর কলকাতায় দলের সভাপতি থাকতে মরিয়া হয়ে যেভাবে দলের নেতা-নেত্রীদের মেসেজ করে ‘প্যানপ্যান’ করেন, তা বিরক্তিকর ও অবাক করার বিষয় বলেও কটাক্ষ কুণালের।